Header Ads

Header ADS

গাভীর গর্ভফুল আটক হওয়া, গর্ভপাত, ও সাময়িক বন্ধ্যাত্ব রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

গর্ভফুল আটক হওয়া (Retained Placenta).
কারনঃ-
= গর্ভাবস্থায় গাভীর শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন, এডিই ও মিনারেলের অভাব হলে।
= গর্ভকালিন সময় কাচা ঘাস ও সুষম খাদ্য না খাওয়ালে।
= নির্দিষ্ট সময়ের আগে বা পরে বাচ্চা প্রসব করলে।
= গর্ভপাত, অপরিনত, মৃত, বিকলাঙ্গ বাচ্চা প্রসব করলে।
= জোরপুর্বক বাচ্চা টেনে হিচরে বের করলে।
= ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাব ও অপুষ্টি হলে।
= সংক্রমন জনিত রোগ ব্রুসেলোসিস (Brucellosis) হলে।
লক্ষনঃ-
= গাভী বাচ্চা প্রসবের ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়া সত্বেও গর্ভফুল না পরাই হলো অন্যতম প্রধান লক্ষন।
= বাচ্চা প্রসবের পর গর্ভফুলের অর্ধেকটা বের হয়ে নিচের দিকে ঝুলে থাকে।
= গাভীর অল্প জ্বর, অস্বস্তি বোধ ও খাওয়ার অরুচি দেখা যাবে।
= গর্ভফুল বের করার জন্য বার বার কোঁথ দিবে ফলে জরায়ু বের হয়ে আসতে পারে।
= ভাজাইনাল ও জরায়ুর প্রোলাপস হতে দেখা যায়।
= প্রসাব করার সময় দুর্গন্ধ হবে ও দুধ কমে যাবে।
= গর্ভফুল বেশি দিন আটকে থাকলে জরায়ু প্রদাহ ও সেপ্টিসেমিয়ার কারনে পশু মারা যেতে পারে।
চিকিৎসাঃ-
২৪ ঘন্টার মধ্যে গর্ভফুল না পড়লে করনীয়.....
= বাহিরের ঝুলন্ত অংশ যতদুর সম্ভব টেনে ধরে কেটে দিন।
= inj: Renamycin-100. এ আই টিউবের মাধ্যমে ৪০ সিঃসিঃ করে ৩/৪ দিন দিতে হবে।
= syr: UTROCARE 450ml করে দিনে ২ বার খাওয়াতে হবে ২/৩ দিন।
= যোনীদ্বারে যাতে মাছির উপদ্রপ কম হয় সেজন্য ভাজাইনার চারিদিকে তারপিন তৈল লাগিয়ে রাখুন।
= গর্ভফুল হাত দিয়ে টেনে বের করবেন না। এতে করে জরায়ুতে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। কয়েক দিনের মধ্যেই পচে পচে বের হয়ে যাবে জরায়ুর কোনরুপ ক্ষতি ছাড়াই।
প্রতিরোধঃ-
= গর্ভাবস্থায় গাভীকে প্রচুর কাচা ঘাস ও শরিষার খৈল খাওয়াতে হবে।
= বাচ্চা প্রসবের ৩০ মিনিট পর syr: UTROCARE 450ml এবং ১ ঘন্টা পর আবার ৪৫০ মিঃলিঃ খাওয়ালে গর্ভফুল আটক হয় না।
= বাচ্চা হওয়ার ২০/২৫ মিনিট পর অক্সিটোসিন ঔষধ যেমন inj: Oxcin 5cc মাংশে দিলে দ্রুত গর্ভফুল পরে যায়।
= কুসুম গরম পানিতে ২০০ গ্রাম চিটাগুড় একত্রে মিশিয়ে বাচ্চা হবার সাথে সাথে খাওয়ান।
= ঝুলন্ত অংশের সাথে ইট বা কাঠের টুকরা বেধে দিলে গর্ভফুল পরতে সহজ হয়।
গর্ভপাত হওয়া (Abortion).
"""""""""""""""""""""""""""""""
যে সময়ে বাচ্চা প্রসব হওয়া উচিত, তার আগেই জরায়ু থেকে বাচ্চা বের হওয়াকে গর্ভপাত (Abortion) বলা হয়। এসব বাচ্চা মৃত অবস্থায় ভুমিষ্ট হয় অথবা ভুমিষ্ট হওয়ার পর মারা যায়।
কারনঃ-
= গর্ভাবস্থায় গাভীতে রোগ-জীবানুর সংক্রমন হলে যেমন....ব্রুসেলোসিস, ট্রাইকোমোনয়াসি গর্ভপাতের প্রধান কারন।
= লেপ্টোস্পাইরোসিস, গলাফুলা, ক্ষুরারোগ, গাভীর গর্ভপাত ঘটিয়ে থাকে।
= রাষায়নিক ও ভেষজ দ্রব্য যেমন..... পটাশিয়াম নাইট্রেট, আর্সেনিক, সীসা, তাম্র, ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন প্রভুতির বিষক্রিয়ায় গর্ভপাত হয়ে থাকে।
= পুষ্টির অভাব হলে যেমন..... খাদ্যে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, স্বাস্থ্যহানির কারনে গর্ভপাত অথবা দুর্বল বা মুত বাচ্চা হতে পারে।
= শারীরিক আঘাত যেমন..... গর্ভাবস্থায় আছার খেয়ে পরা, অতিরিক্ত লাফালাফি গর্ভপাতের কারন হতে পারে।
= গর্ভাবস্থায় গাভীকে অক্সিটোসিন জাতীয় ইনজেকশন প্রয়োগ করলে গর্ভপাত হয়।
লক্ষনঃ-
= ২/৩ মাসেরর গর্ভবতী গাভী গর্ভকালিন সময়ে অগোচরেই গর্ভপাত হয়ে যায়।
= গর্ভকালের শেষের দিকে হলে স্বাভাবিক লক্ষনের মতই লক্ষন প্রকাশ পাবে।
= অনেক সময় যোনীদ্বার দিয়ে পানি বা মরা রক্ত বের হতে দেখা যাবে।
= গাভী অস্বস্তি অনুভব করে বার বার উঠা বসা করতে দেখা যাবে।
= কোন কোন ক্ষেত্রে জরায়ু বিদরন, জরায়ু প্রদাহ, রক্তপাত, যোনী প্রদাহ, যোনী বিদরন হতে দেখা যায়।
চিকিৎসাঃ-
= গর্ভপাতের লক্ষন শুরু হলে চিকিৎসা দিয়ে কোন ভাল ফল পাওয়া যায় না। অতএব যত তাড়াতাড়ি বাচ্চা হবে ততই গাভীর জন্য মঙ্গল। বাচ্চা প্রসবে বিলম্ব হলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান দ্বারা জরায়ু থেকে বাচ্চা ও গর্ভফুল বের করে ফেলুন।
= inj: Renamycin-100 এ আই টিউবের মাধ্যমে ৪০ সিঃসি করে পর পর ৩ দিন জরায়ুতে দিতে হবে।
প্রতিরোধঃ-
= গাভীর গর্ভপাত হওয়ার অভ্যাস থাকলে ইনজেকশন প্রোজেস্টারন হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে গর্ভপাত রোধ করা যায়।
= গর্ভাবস্থায় গাভী যাতে বেশি লাফালাফি না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
= রাষায়নিক ও ভেষজ দ্রব্য যাতে গাভী না খায় সেজন্য সতর্ক থাকুন।
= গর্ভপাত হওয়া গাভীকে পর পর ২টা হিট মিস দিয়ে ৩য় বারের সময় প্রজনন করালে আর গর্ভপাত হয় না।
সাময়িক বন্ধ্যাত্ব (Infertility).
সাধারনত নিয়মিত বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা লোপ পেলে তাকে সাময়িক বন্ধ্যাত্ব (Infertility) বলে।
অর্থাৎ গাভী বাচ্চা প্রসবের পর যে সময়ের মধ্যে হিটে আসার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি সময় নেয়া এবং বকনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে হিটে আসা কে সাময়িক বন্ধ্যাত্ব বলে।
কারনঃ-
= গাভীর ডিম্বাশয়ে কর্পাস লিউটিয়াম স্থায়ীভাবে অবস্থান করলে।
= জরায়ুতে জীবানুর সংক্রমন, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, ওভারীতে সিষ্ট হলে হিট আসতে বিলম্বব হয়।
= গাভী কৃমিতে আক্রান্ত থাকলে। 
= কাচা ঘাস ও ভিটামিন এডিই এর অভাবেও গাভী বা বকনা হিটে আসতে বিলম্বিত হয়।
= বাচ্চা প্রসবের পর গর্ভফুলের কিছু অংশ জরায়ুতে থেকে গেলে। 
= জরায়ু ইনফেকশন, বাচ্চা ও গর্ভফুল হাত দিয়ে বের করার সময় হাত জীবানু মুক্ত না করেই ভিতরে প্রবেশ করালে।
লক্ষনঃ-
= গাভীর ক্ষেত্রে বাচ্চা প্রসবের ৩ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্বেও হিটে না আসা এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষন।
= বকনার ক্ষেত্রে ১৮ মাস পার হয়ে যাওয়া এবং শরীরের লোম বড় হয়ে যাওয়া, চামড়া মোটা ও শক্ত হওয়া।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধঃ-
= inj: Dinoprost প্রয়োগের মাধ্যমে ২/৩ দিনের মধ্যে গাভী/বকনাকে হিটে আনা যায়।
= নিয়মিত কৃমিমুক্ত করে syr: ESKAVIT ADE খাওয়ালে অথবা inj: Tokovita ADE মাত্রা অনুযায়ী দিতে হবে।
= খাদ্য তালিকায় কাচা ঘাসের সরবরাহ নিশ্চিত করুন।
= গাভী বাচ্চা প্রসবের পর ২.৫ সিঃসিঃ FERTILON মাংশে অথবা রক্ত শিরায় দিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
= বকনার ক্ষেত্রে বয়স ১৮ মাস পার হলে ই-সেলেনিয়াম খাওয়ানো ও inj: FERTILON 5cc মাংশে দিলে ২০ দিনের মধ্যে হিটে আসে।

যদি পোষ্ট টির মাধ্যেমে আপনি একটু হলেও উপকার পেয়ে থাকেন তাহলে সেয়ার করবেন আমাদের এই পোষ্টটি। আর আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ...

No comments

Powered by Blogger.